ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেয়ার নিয়ম

ট্যাক্স রিটার্ন হল একটি ফর্মের মাধ্যমে কোন ব্যক্তি বা সংস্থা্র আয় এবং পরিস্থিতির একটি হিসাব উপস্থাপন করা, যেটি ট্যাক্স কর্তৃপক্ষ দ্বারা করের দায় নির্ধারণের জন্য ব্যবহার করা হয়।

E return

E return
E return

E return বা ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়া বাংলাদেশের সকল করদাতাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। এর মাধ্যমে করদাতার বার্ষিক আয়-ব্যয় সম্পদ ও দায়ের তথ্য কর কর্তৃপক্ষ যাচাই করে থাকে।

E return – জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া

বাংলাদেশে আয়কর রিটার্ন এখন অনেক সহজ, বিশেষ করে অনলাইনে e return ব্যবস্থার মাধ্যমে। নিচে আমি ধাপে ধাপে পুরো প্রক্রিয়াটা বুঝিয়ে দিচ্ছি –

TIN  সংগ্রহ

যদি আপনার আগে থেকে e-TIN না থাকে:

1. https://etaxnbr.gov.bd / https://etaxnbr.gov.bd এ ভিজিট করুন
2. “Register” এ ক্লিক করুন
3. প্রয়োজনীয় তথ্য (জাতীয় পরিচয়পত্র, মোবাইল, ইমেইল ইত্যাদি) দিন
4. আপনি একটি e-TIN certificate পাবেন

E return – প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

রিটার্ন দেওয়ার আগে নিচের ডকুমেন্টগুলো হাতে রাখুন:

-জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)
-e-TIN সার্টিফিকেট
-ব্যাংক স্টেটমেন্ট / আয়-ব্যয়ের তথ্য
-চাকরিজীবী হলে বেতন স্লিপ বা Form 108
-বিনিয়োগ সংক্রান্ত প্রমাণপত্র (যদি থাকে)
-কর জমার চালান (যদি আগে কর কেটে রাখা হয়)
-আগের বছরের রিটার্ন কপি (যদি থাকে)

e return login – পোর্টাল লগইন

https://etaxnbr.gov.bd / https://etaxnbr.gov.bd এই লিংকে ভিজিট
-Login এ গিয়ে আপনার ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে প্রবেশ করুন।

Submit Return সেকশন সিলেক্ট করুন

-Submit Return এ ক্লিক করুন
-নতুন রিটার্ন বা সংশোধিত রিটার্ন (Revised Return) নির্বাচন করুন
-সঠিক অর্থবছর সিলেক্ট করুন

আয় ও ব্যয়ের তথ্য পূরণ করুন

সিস্টেমে আপনার আয়, ব্যয়, করযোগ্য আয় এবং কর ছাড়ের তথ্য ধাপে ধাপে দিতে হবে:

1. ব্যক্তিগত তথ্য (নাম, ঠিকানা, পেশা ইত্যাদি)
2. আয়: বেতন, ব্যবসা, ভাড়া, সুদ, ইত্যাদি
3. ব্যয়: জীবনযাপন ব্যয়, বিনিয়োগ, দান ইত্যাদি
4. কর ছাড় (Tax Rebate): বিনিয়োগ বা দানের উপর ভিত্তি করে

কর হিসাব যাচাই

সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার ট্যাক্স হিসাব করে দেখাবে — কত আয়কর দিতে হবে বা রিফান্ড পাওয়ার যোগ্য কিনা।

রিটার্ন জমা দিন

-সব তথ্য যাচাই করে Submit বাটনে ক্লিক করুন।
-জমা দেওয়ার পর আপনি একটি Acknowledgment Receipt (প্রমাণপত্র) পাবেন — এটি সংরক্ষণ করুন।

প্রিন্ট বা ডাউনলোড করুন

আপনি চাইলে রিটার্নের একটি কপি PDF আকারে ডাউনলোড ও প্রিন্ট করে রাখতে পারেন।

Zero Return কি?

Zero return বলতে কর আইনে কিছু নেই, সাবমিট ফর্মে ওই বছরের আয়, ব্যয়, করযোগ্য আয় ও করের পরিমাণ উল্লেখ করতে হয়। এখন, যদি কোনো বছরের আয় না থাকে বা করযোগ্য আয় শূন্য হয়, তখন রিটার্ন ফরমে আয়ের জায়গায় “০” (শূন্য) বা “Nil” লেখা হয়। মানুষ একে প্রচলিত ভাষায় জিরো রিটার্ন বলে।

জমা দেওয়ার শেষ তারিখ

সাধারণত প্রতি বছর ৩০ নভেম্বর হলো ব্যক্তিগত আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ।(সরকার প্রয়োজনে সময় বাড়াতে পারে।)

টিপস:

-রিটার্ন জমা না দিলে জরিমানা হতে পারে।
-ভুল তথ্য দিলে সংশোধন করার সুযোগ আছে (“Revised Return”)।
-চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তা চাইলে সাহায্য করতে পারেন।