HSC Routine | এইচএসসি পরীক্ষা বাতিল

আন্দোলনের মুখে এইচএসসি ও সমমানের স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করা হয়েছে। এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল কীভাবে দেওয়া হবে, সে সিদ্ধান্ত পরে হবে।

HSC Routine

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার এসব তথ্য জানিয়েছেন।

এদিকে আজ দুপুরে সচিবালয়ে গিয়ে স্থগিত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাগুলো আর দিতে চান না এবং অটো পাসের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পরীক্ষার্থীরা চান, ইতিমধ্যে যে কটি বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছে, তার ভিত্তিতে এবং স্থগিত বিষয়ের পরীক্ষা এসএসসির সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সঙ্গে ম্যাপিং করে এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হোক। এ দাবিতে আগের দিন (গতকাল সোমবার) ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ঘেরাওয়ের পর আজ সচিবালয়ের ভেতরে ঢুকে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় যে ভবনে অবস্থিত, সেই ভবনের নিচে অসংখ্য শিক্ষার্থী জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ করেন। তাঁরা স্লোগান দিচ্ছেন, ‘আমাদের দাবি মানতে হবে।’ এরপর একপর্যায়ে বেলা ৪টার দিকে সচিবালয়ের ১৮ তলায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উঠে যায়। শিক্ষার্থীরা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ দপ্তরের সামনে অবস্থান নেয়। এ সময় সচিবালয়ের সব প্রবেশপথ আটকে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে তাঁদের দাবি মেনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হয়।

সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভবনের নিচে আর এইচএসসি পরীক্ষা না দেওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভছবি: মোশতাক আহমেদ

২০২৪ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয় গত ৩০ জুন থেকে। এর মধ্যেই ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সাতটি পরীক্ষাসহ বিভিন্ন বোর্ডের বেশ কয়েকটি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। এরপরই সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কয়েক দফায় এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। প্রথমে গত ১৮ জুলাইয়ের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। তারপর একসঙ্গে ২১, ২৩ ও ২৫ জুলাইয়ের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপর ২৮ জুলাই থেকে ১ আগস্ট পর্যন্ত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। পরে সিদ্ধান্ত হয় ১১ আগস্ট থেকে নতুন সময়সূচিতে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেওয়া হবে। কিন্তু পরে জানানো হয়, ১১ আগস্ট পরীক্ষা হচ্ছে না। শিক্ষা বোর্ডের একটি সূত্র বলেছিল, প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পর বিভিন্ন এলাকায় থানায় হওয়া হামলায় প্রশ্নপত্র রাখা ট্রাংক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ জন্য ১১ আগস্ট থেকে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছিল। সর্বশেষ আগামী ১১ সেপ্টেম্বর থেকে স্থগিত পরীক্ষাগুলো নেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছিল শিক্ষা বোর্ড। সেটি অনুমোদনও করা হয়।

এদিকে পরীক্ষার্থীরা গতকাল সোমবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবস্থান নিয়ে পরীক্ষায় বসার মতো অবস্থায় নেই বলে বিক্ষোভ করেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পরীক্ষার্থীরা চান, ইতিমধ্যে যে কয়টি বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছে, তার ভিত্তিতে পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হোক। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে যৌক্তিক দাবি পূরণের ইতিবাচক আশ্বাসের তারা আন্দোলন স্থগিত করেন। শিক্ষার্থীদের দাবির পরে আজ সকালে এইচএসসি পরীক্ষার বাকি বিষয়গুলোর পরীক্ষা অর্ধেক প্রশ্নোত্তরে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। আর পরীক্ষা ১১ সেপ্টেম্বর থেকে পরীক্ষা আরও ২ সপ্তাহ পেছানোর সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তা না মেনে সচিবালয়ে ঢুকে বিক্ষোভ করেন। আন্দোলনের মুখে একপর্যায়ে এইচএসসি ও সমমানের স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করা হয়। এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল কীভাবে দেওয়া হবে, সে সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের পরে জানানো হবে।