সফল হতে হলে সফল উদ্যোক্তা হওয়ার উপায় জানতে হবে। সফল উদ্যোক্তার জীবনী পড়ার দ্বারা, সহজেই সফল হওয়ার মূলমন্ত্র জানা সম্ভব। আমাদের অনেকের স্বপ্ন একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়া। কিন্তু সঠিক দিক নির্দেশনার অভাবে, অনেকেই ব্যর্থ হয়ে যান।
How To Become An Entrepreneur
দক্ষতা থাকলে যেকোন বয়সেই উদ্যোক্তা হওয়া সম্ভব।সত্যিকারার্থে বলতে গেলে। উদ্যোক্তা হওয়ার বিশেষ কোনও মুহূর্ত বা কাল নেই। একজন ব্যক্তি যেকোনো সময় নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে পারে।
উদ্যোক্তা মানে কি ?
উদ্যোক্তা হলো এমন একজন ব্যক্তি যিনি তার কর্মসংস্থানের জন্য নতুন ব্যবসার পন্থা তৈরি করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। একজন উদ্যোক্তা ব্যবসায়ের ঝুঁকি বহন করে এবং ব্যবসায়ের সম্পূর্ণ মুনাফা একা ভোগ করেন।
সুতরাং, একজন উদ্যোক্তা একটি নতুন ব্যবসায় উদ্ভাবন বা অন্য কোনো ব্যবসায় শুরু করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং ব্যবসায়ের ঝুঁকি বহন করেন আর ব্যবসায়ের সম্পূর্ণ লাভ একা ভোগ করেন।
উদ্যোক্তাকে অনেকভাবে সংজ্ঞায়িত করা করা যায়। যেমন: যে ব্যক্তি একটি নতুন ব্যবসায় উদ্যোগ শুরু করার ঝুঁকি গ্রহণ করে তাকে উদ্যোক্তা বলা হয়। আবার যিনি তার আত্মকর্মসংস্থানের জন্য নিজের কর্মসংস্থানের চিন্তা করে নতুন কোনো কাজ হাত দেন তখন ঐ ব্যক্তিকেও উদ্যোক্তা বলা হবে।
How To Become An Entrepreneur
দক্ষতা থাকলে যেকোন বয়সেই উদ্যোক্তা হওয়া সম্ভব।সত্যিকারার্থে বলতে গেলে। উদ্যোক্তা হওয়ার বিশেষ কোনও মুহূর্ত বা কাল নেই। একজন ব্যক্তি যেকোনো সময় নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে পারে।
একজন সফল উদ্যোক্তা হলে অবশ্যই কিছু গুণ থাকা জরুরি। এসব গুণ এবং বৈশিষ্ট্য যদি আপনার মাঝে নিয়ে আসতে পারেন, তাহলে একজন সফল উদ্যোক্তার তালিকায় নিজের নাম লিখতে পারবেন। তাহলে কথা না বাড়িয়ে, মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।
উদ্যোক্তা হওয়ার পূর্বশর্ত
ইচ্ছা শক্তি: উদ্যোক্তা হওয়ার প্রথম শর্ত হলো ইচ্ছা শক্তি। যেকোনো উদ্যোগ শুরু করতে হলে প্রথম থেকেই আপনার প্রচন্ড “ইচ্ছা শক্তি” থাকতে হবে।
আত্মবিশ্বাস: একজন উদ্যোক্তা হবার প্রধান শর্ত হচ্ছে আত্মবিশ্বাস। নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে। ব্যবসার শুরু থেকেই বিশ্বাস করতে হবে, আপনি যা করতে যাচ্ছেন, বা যা কিছু করছেন এসব কিছুই আপনার সফল হওয়ার জন্য অত্যাবশ্যকীয়।
How To Become An Entrepreneur
মানসিক স্থিতিশীলতা: অধিকাংশ উদ্যোক্তাদের ব্যর্থ হওয়ার জন্য তারা নিজেরাই দায়ী। কারণ, তারা কোন একটি কাজে হঠাৎ করেই উদ্যোগ নেয় এবং ভবিষ্যত ফলাফলের কথা ভাবার জন্য পর্যাপ্ত সময় নিয়ে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়না।
সুতরাং, সফল উদ্যোক্তা হতে হলে। কোন কাজে তড়িগড়ি করে সিদ্ধান্ত নিবেন না। বরং নিজের মানসিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সচেষ্ট হন। কিন্তু একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন। কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় ধরে ভাববেন না। এতে করে কাজের কাজ কিছুই হবে না।
উদ্যোক্তার বৈশিষ্ট, গুণাবলী ও করণীয়
দেখা ও শেখা : কোন বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকলে, সে বিষয়ে সফল হওয়া অসম্ভব। পৃথিবীতে যত সফল উদ্যোক্তা আছে, তাদের প্রত্যেকেই হয় অভিজ্ঞতা থেকে শিখেছে না হয় বই পড়ে শিখেছে। সব সময় অন্যের অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে চেষ্টা করুন। এর ফলে আপনাকে আর কষ্ট কিংবা টাকা হারাতে হবে না।
সফল উদ্যোক্তাদের জীবনী পড়ুন? তারা কিভাবে ব্যবসা করছে, তা দেখুন। তাদের ব্যবসায়ের কৌশলগুলো দেখুন। অন্যান্য উদ্যোক্তাদের দেখুন, তাদের ভুল এবং সঠিক বিষয়গুলো দেখুন। এসব করার দ্বারা উদ্যোক্তা হিসাবে সফল হওয়াটা সহজ হয়ে যাবে।
উদ্ভাবনী হন: ব্যবসায়ের পরিবেশ প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হয়। যেই কলা-কৌশল গতকাল কাজ করেছে, হতে পারে সে কলা-কৌশল আগামীকাল কাজ করবে না। নিজেকে কোন কিছুতে স্থির রাখা যাবে না। প্রতিনিয়ত নতুন কিছু করার চেষ্টা করুন।
How To Become An Entrepreneur
নিত্য নতুন চিন্তা করার চেষ্টা করুন। বাজরে কখন কিসের চাহিদা থাকে, সেটা বোঝার চেষ্টা করুন। যুগের সাথে নিজের ব্যবসাকে তাল মেলানোর চেষ্টা করুন।
লক্ষ্য স্থির করুন:নিজের লক্ষ্যকে সুনির্দিষ্ট করুন।বাস্তব ও সময়ভিত্তিক লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে।মূল লক্ষ্যকে ভেঙে ছোট ছোট লক্ষ্যে বিভক্ত করুন এবং সেগুলো অর্জনের জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করুন।লক্ষ্যের গুরুত্ব অনুসারে কর্মপরিকল্পনা ঠিক করুন।লক্ষ্য অর্জনের উন্নতি অনুসরণ করুন।সব সময় লক্ষ্য নির্ধারণ করে কাজ করার অভ্যাস করুন।
লক্ষ্য নির্ধারণ করে সঙ্গে সঙ্গে ফল আশা করবেন না। বাস্তবতা ও আপনার সক্রিয় অংশগ্রহণের ওপর নির্ভর করে ফলাফলের সময়।
মূলধনের আকার ও উৎস নির্ধারণ : আপনার পরিকল্পনা অনুসারে মূলধনের আকার বা পরিমান নির্ধারণ করু।
একজন নতুন উদ্যোক্তার জন্য সাধারণত দুটি মাধ্যম থেকে মূলধন সংগ্রহ করা যায়। যথা:
আভ্যন্তরীণ উৎস: নিজস্ব তহবিল, পারিবারিক সঞ্চয়, আত্মীয়-স্বজন কিংবা বন্ধু-বান্ধবের সঞ্চয় ইত্যাদি।
বাহ্যিক উৎস: ব্যাংক ঋণ, সরকারি ঋণ, শেয়ার বাজার ইত্যাদি।
How To Become An Entrepreneur
একজন নতুন উদ্যোক্তা হিসাবে আপনার মূলধনের উৎস নির্ধারণ করুন। ব্যাংক লোণ নিলে আপনাকে অতি উচ্চ মাত্রায় সুদ দিতে হবে, যা কিনা প্রাথমিক অবস্থায় আপনার জন্য বড় বাঁধা। তাই চেষ্টা করুন আভ্যন্তরীণ উৎস থেকে মূলধন জোগাড় করা। আর বাহ্যিক উৎস হিসাবে সরকারি ঋণের খাতকে নির্বাচন করতে পারেন।
ঝুঁকি নিন এবং সুযোগের সদ্ব্যবহার করুন : মানুষ সাধারণত ঝুঁকি বিমুখ। কিন্তু একজন উদ্যোক্তার মধ্যে যদি এই বদগুণ থাকে তাহলে তার উদ্যোক্তার পথে না হাটাই ভাল। ঝুঁকি উদ্যোক্তার জীবনের একটি অংশ। তবে, সব ধরণের ঝুঁকি নেয়াটা সবসময় উচিত নয়।
How To Become An Entrepreneur
একজন সফল উদ্যোক্তার সবচেয়ে বড় গুণ হল, সে জানে কোন ঝুঁকি নিতে হবে এবং কোন ঝুঁকি নেয়া উচিত নয়। ঝুঁকি নেয়ার পূর্বে অবশ্যই সেই বিষয়ে অ্যানালাইসিস করুন। অ্যানালাইসিস করার সময় বেশ কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। যথা:
-ঝুঁকি সনাক্ত করা।
-নির্দিষ্ট ঝুঁকির জন্য সম্পদের দুর্বলতা মূল্যায়ন করা।
-সম্পদের উপর সম্ভাবনা, আক্রমণের এবং ফলাফলের পরিমাণ নির্ধারণ।
-ঝুঁকি কমানোর উপায় চিহ্নিত করা।
How To Become An Entrepreneur
যখন কোন বিষয়ে ঝুঁকি কম থাকবে এবং লাভের পরিমাণ বেশি থাকবে, তখন বুদ্ধিমানের কাজ হল ঝুঁকি নিয়ে নেয়া। সুযোগে সদ্ব্যবহার করাটা উদ্যোক্তার সবচেয়ে বড় গুণ।
উপরে একজন সফল উদ্যোক্তা হতে হলে করনীয় কিছু গুণ ও কাজের বর্ণনা দেয়া হয়েছে। এসব গুণ ছাড়া আরও অনেক গুন রয়েছে যা একজন সফল উদ্যোক্তার থাকা উচিত। কিন্তু উপরে উল্লেখিত গুন ও কাজগুলো অবশ্যই করতে হবে।