দাউদ থেকে মুক্তির উপায়

দাউদ এক প্রকার ফাঙ্গাল ইনফেকশন। একে ইংরেজিতে রিং ওয়ার্ম বলা হয়। এটি চুলকানির মতো কষ্টকর ত্বকের রোগ হওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়। শরীরের যেকোনো অংশেই এটা হতে পারে।

দাউদ থেকে মুক্তির উপায়
দাউদ থেকে মুক্তির উপায়

দাউদ থেকে মুক্তির উপায়

সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে এটি ছোঁয়াচে রোগ। তাই এই রোগের প্রকোপ দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা শুরু করতে হবে।

তবে আধুনিক মেডিসিনের সাহায্যে রিং ওয়ার্মের চিকিৎসা করা যেতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে বেশ কিছু ঘরোয়া চিকিৎসা রয়েছে যা খুব দারুন কাজে দেয়।

পেঁপে

রিংওয়ার্ম বা দাউদের প্রকোপ কামতে যদি নিয়মিত পেঁপেকে কাজে লাগাতে পারেন, তাহলে কিন্তু দারুন উপকার পাওয়া যাবে। আসলে এই ফলটির ভিতরে উপস্থিত অ্যান্টিফাঙ্গাল প্রপাটিজ বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে ছোট একটা পেঁপের টুকরো নিয়ে দাউদের উপর লাগাতে হবে। তারপর ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে জায়গাটা।

নিম পাতা

এই প্রকৃতিক উপাদানটির ভিতরে উপস্থিত অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রপাটিজ দাউদের মতো ত্বকের রোগের প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে অল্প পরিমাণ নিম তেল নিয়ে দাউদের উপর বারে বারে লাগাতে হবে। তাহলেই দেখবেন সমস্য়া কমে যেতে সময় লাগবে না। প্রসঙ্গত নিম তেলের সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়েও লাগালে কিন্তু এক্ষেত্রে দারুন উপকার পাওয়া যায়।

হলুদ

এতে রয়েছে বিপুল মাত্রায় অ্যান্টি-বায়োটিক প্রপাটিজ, যা এই ধরনের সংক্রমণের প্রকোপ কমাতে দারুন কাজে আসে। এক্ষেত্রে প্রথমে অল্প করে হলুদ পানি বানিয়ে নিন। তারপর তাতে তুলে চুবিয়ে যে যে জায়গায় দাউদ হয়েছে, সেখানে আলতে করে লাগাতে থাকুন। প্রসঙ্গত, দিনে কম করে তিনবার এমনটা করলে রোগ সেরে যেতে শুরু করবে দেখবেন।

রসুন

এতে রয়েছে অ্যাজুইনা নামে এক ধরনের প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান, যা যে কোনো ধরনের ফাঙ্গাল ইনফেকশন কমাতে দারুন কাজে লাগে। তাই তো রিংওয়ার্মের ক্ষেত্রেও এই উপকরণ দারুন উপকারে লাগে। এক্ষেত্রে অল্প করে রসুনের কোয়া নিয়ে সেগুলিকে ছোট ছোট করে কেটে নিন। তারপর সেগুলিকে দাদের উপর রাখুন এবং ব্যান্ডেজ দিয়ে বেঁধে দিন। এমনটা সারা রাত রাখলেই দেখবেন ফল পেতে শুরু করেছেন। প্রসঙ্গত, রসুনের কোয়ার পেস্ট বানিয়ে ক্ষত স্থানে লাগালেও সমান উপকার পাওয়া যায়।

অ্যালোভেরা

ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে শুধু নয়, ফাঙ্গাল ইনফেকশনের মতো রোগের প্রকোপ কমাতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি দারুন কাজে আসে। এক্ষেত্রে রাতে শুতে যাওয়ার আগে অ্যালোভেরা পাতা থেকে পরিমাণ মতো জেল সংগ্রহ করে দাউদের উপর সরাসরি লাগাতে হবে। সারা রাত রেখে পরদিন সকালে ধুয়ে ফলতে হবে। প্রতিদিন এই ঘরোয়া চিকিৎসাটি করলে অল্প দিনেই দেখবেন রোগ সেরে গেছে।

নারকেল তেল

এই প্রাকৃতিক তেলটিও দাউদের প্রকোপ কমাতে দারুন উপকারে লাগে। আসলে এই তেলটিতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা এমন ধরনের ত্বকের রোগ সারাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে রাতে শুতে যাওয়ার আগে যে জায়গায় দাউদ হয়েছে সেখানে অল্প করে নারকেল তেল লাগিয়ে শুয়ে পরুন। সকালে উঠে জয়গাটা ধুয়ে দিন। এমনটা কয়েকদিন করলেই দেখবেন ফল পেতে শুরু করেছেন।

ভিনগার আর লবণ

পরিমাণ মতো লবণের সঙ্গে অল্প করে ভিনিগার মিশিয়ে একটা পেস্ট বিনিয়ে নিন। তারপর সেই পেস্ট রিংওয়ার্মের উপর লাগিয়ে কম করে পাঁচ মিনিট রেখে দিন। এমনটা প্রতিদিন করলেই দেখবেন সাত দিনেই রোগ সেরে যাবে।

অ্যাপেল সিডার ভিনিগার

একটা ছোট পাত্রে অল্প করে অ্যাপেল সিডার ভিনিগার নিন প্রথমে। তারপর তাতে তুলো ভিজিয়ে ক্ষত স্থান পরিষ্কার করুন। এমনটা দিনে কয়েক বার করলেই দেখবেন সমস্যা কমতে শুরু করে দিয়েছে।

সরষে বীজ

এমন ধরনের রোগের প্রকোপ কমাতে সরষে বীজের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। পরিমাণ মতো সরষে বীজ নিয়ে কম করে ৩০ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সময় হয়ে গেলে সরষে বীজগুলো সংগ্রহ করে বেটে নিন। তারপর সেই পেস্টটা ক্ষত স্থানে লাগান। এমনটা কয়েক দিন করলেই ভালো হয়ে যাবে।