এয়ার হোস্টেস ক্যারিয়ার

পেশা হিসেবে তরুণরা অনেক স্মার্ট এবং পছন্দের মনে করছে এয়ারলাইন্সকে। শুধু তাই নয়, এখানে পাওয়া যায় ভিন্ন রকম অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ। এয়ারলাইন্স পেশাটা আপন করতে চাইলে গ্ল্যামারটার কথাও একটু ভাবতে হবে।

Air Hostess কি ?

তবে শুধু গ্ল্যামারই এখানে গুরুত্বপূর্ণ নয়; ইচ্ছাশক্তি, আত্মবিশ্বাস আর ঝুঁকি গ্রহণের মানসিকতাও থাকতে হবে। তাই তো দিন দিন ক্যারিয়ার হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এয়ার হোস্টেস ও কেবিন ক্রু পেশা।

তাই এখানে বাড়ছে প্রতিযোগিতাও। তবে এর জন্য দীর্ঘ প্রস্তুতি না থাকলেও চলে। কিছু প্রশিক্ষণ কোর্স করেও বাংলাদেশ বিমান ও বেসরকারি খাতে কর্মরত এয়ারলাইন্সে চাকরির সুযোগ নেওয়া যায়। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের অন্যান্য এয়ারলাইন্সে সাফল্যের এ ক্যারিয়ারে যুক্ত হয়েছে এবং হচ্ছেন বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীরা।

Air Hostess হওয়ার যোগ্যতা 


এয়ার হোস্টেস বা কেবিন ক্রু হিসেবে ক্যারিয়ার বেছে নিতে প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে ভালো। সেই ক্ষেত্রে এইচএসসিতে প্রতি বিষয়ে বি গ্রেড এবং একইভাবে ‘এ’ লেভেল পাস করতে হবে। তবে কখনও কখনও গ্র্যাজুয়েশন এবং মাস্টার্সও চায় চাকরিদাতা কর্তৃপক্ষ। আর বয়সটাও এখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

আপনার বয়স হতে হবে ন্যূনতম ১৮ বছর। লাগবে বাংলাদেশি পাসপোর্ট। তবে স্মার্টনেস, ভালো ইংরেজি বলার দক্ষতা এগিয়ে রাখবে এয়ার হোস্টেস বা কেবিন ক্রু পেশার প্রতিযোগিতায়। উপস্থিত বুদ্ধি, ধৈর্য ও সহনশীলতা, যে কোনো পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা, বিরক্তির মুহূর্তেও নিজেকে স্বাভাবিক রাখার ক্ষমতা এই চাকরিতে সফলতা এনে দেবে।

Air Hostess এর কাজের ধরন


এখানে আপনার কাজটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। একটি এয়ারলাইন্স কোম্পানিকে ভালো অবস্থানে নেওয়া আবার সেই প্রতিষ্ঠানকে টেনে মাটিতে নামানোর কিন্তু অনেকটাই নির্ভর করে আপনার ওপর! আপনার কাজ হচ্ছে বিমানে বহনকারী যাত্রীদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়া ও সেবা সুনিশ্চিত করা। এটাই আসলে আপনার প্রধান কাজ। এ ছাড়া বিমানের ওঠা-নামা সংক্রান্ত সব তথ্য পাইলটের হয়ে যাত্রীদের জানাতে হবে আপনাকেই।

পরিচ্ছন্নতা, খাবার-দাবারের সরঞ্জাম পৌঁছানো, জরুরি ইকুইপমেন্ট, ফার্স্ট এইড আগে থেকেই ঠিক রাখা আপনার দায়িত্ব। বিমানে ওঠার পর যাত্রীদের টিকিট মিলিয়ে দেখা, যাত্রীদের সিট দেখিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি তাদের আসন নিশ্চিত করাসহ বিমান আকাশে ওড়ার আগে যাত্রীদের সিটবেল্ট লাগাতে বলা এবং কেবিন লাগেজ সিটে পৌঁছাতে সহায়তা করাই হচ্ছে আপনার দায়িত্ব। এসব যথাযথভাবে আদায় করলে আপনার মাধ্যমে সুনাম অর্জন করবে এয়ারলাইন্স কোম্পানিটি। সেই সঙ্গে আপনার দায়িত্বের পাশাপাশি সুনামও ছড়িয়ে পড়বে।

স্বপ্নের আকাশে :
এই পেশায় কাজের কোনো সুনির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। উড়োজাহাজ আকাশে থাকা মানেই কাজ থাকবে। বিমান সংস্থা দেশ-বিদেশে বেশ কিছু শহরে ফ্লাইট পরিচালনা করে না। বর্তমানে দেশের অভ্যন্তরেও আছে ফ্লাইট।

ঢাকা-চট্টগ্রাম, সিলেট, কক্সবাজার, রাজশাহী, বরিশাল, সৈয়দপুরে ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিকভাবে ফ্লাইট চালাচ্ছে ঢাকা থেকে জেদ্দা, দুবাই, মাস্কাট, কুয়ালালামপুর, ব্যাংকক, কাঠমান্ডু, কলকাতাসহ আরও অনেক শহরে। তবে আপনাকে সপ্তাহে গড়ে ৩০ ঘণ্টা করে কাজ করতে হবে। আর মাসে সর্বোচ্চ ১২০ ঘণ্টা ফ্লাই করার সুযোগ পাবেন।

বেতন-ভাতা : ক্যারিয়ারের শুরুতে আপনি ৩৫-৫০ হাজার টাকা মাসিক বেতন পাবেন। কোনো কোনো এয়ারলাইন্স কোম্পানি এ ক্ষেত্রে বেতনকে আরও বেশি গুরুত্ব দেয়। তারা ৭০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত বেতন দিয়ে থাকে। পাশাপাশি পৃথিবীর যে দেশেই যান না কেন, সেখানে আপনার জন্য থাকবে থাকা-খাওয়া ও ফ্লাইং আওয়ারভিত্তিক ভাতা। এ ছাড়া অন্যান্য পেশার মতো এখানেও আবাসন খরচ, প্রভিডেন্ট ফান্ড, মেডিকেল ভাতাসহ রাজ্যের সুযোগ-সুবিধা।

সুযোগ-সুবিধা : দেশ দিয়েই আপনার ওড়াউড়ি শুরু হতে পারে। এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে পরে দেশের বাইরের অন্যান্য বড় এয়ারলাইন্সগুলোতেও কাজ করতে পারেন। এখান থেকে আপনি যেই অভিজ্ঞতা পাবেন, তাই আপনার বড় হাতিয়ার। বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো আপনার এই অভিজ্ঞতাটাকেই গুরুত্ব দেবে। পাশাপাশি ভাষাটাও কিন্তু এখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যত বেশি দেশের ভাষা জানবেন, তত বেশি ভালো করার সুযোগ পাবেন এ পেশায়।

দেশের জন্য : আপনি আপনার দেশটাকে রিপ্রেজেন্ট করবেন অন্য দেশের, অন্য ভাষাভাষী মানুষের কাছে। আপনার ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে বিদেশিরা জানতে চাইবেন আপনার দেশ সম্পর্কে। তারা ভালো ব্যবহার পেলে দেশটাকে ভালোভাবে নেবে। আর আপনার খারাপ আচরণটাও কিন্তু বয়ে বেড়াতে হবে দেশকে। তাই এই পেশাটা আপন করার আগে দেশকে ভালোবাসুন। দেশের মানুষকে ভালোবাসুন এবং দেশ সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জেনে তারপর পা বাড়ান। আকাশে উড়িয়ে বেড়ান আপনার স্বপ্নদের। উড়–ন আপনিও!

Air Hostess এর প্রস্তুতি 


এ স্মার্ট পেশাটাতেই কেবল তরুণরা খুঁজে পায় অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ! এখানে বয়সটাই গুরুত্বপূর্ণ। এই পেশাটাকে আপন করার আগে আপনার শারীরিক গঠন ও গ্ল্যামারটার কথা মাথায় রাখবেন। তবে গ্ল্যামারই এখানে সব নয়। ইচ্ছাশক্তি, আত্মবিশ্বাস আর ঝুঁকি গ্রহণের মানসিকতা থাকলে আজই প্রস্তুতি নিতে শুরু করুন।

কোথায় নেবেন প্রস্তুতি; চলুন জেনে নেই-
কলেজ অব অ্যাভিয়েশন টেকনোলজি :
কোর্সের মেয়াদ তিন মাস। সপ্তাহে দু’দিন করে ক্লাস। ফি ৩৫ হাজার টাকা।
ঠিকানা :সেক্টর-১১, রোড-২, বাড়ি-১৪, উত্তরা, ঢাকা।

ইউনাইটেড কলেজ অব অ্যাভিয়েশন সায়েন্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট
কোর্সের মেয়াদ তিন মাস। ক্লাস সপ্তাহে তিন দিন। ফি ২০ হাজার টাকা।
ঠিকানা : সেক্টর-৩, রোড-৪, বাড়ি-১৬, উত্তরা, ঢাকা।
অ্যারোনটিক্যাল ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ

কোর্সের মেয়াদ তিন মাস। ক্লাস সপ্তাহে তিন দিন। ফি ১৫ হাজার টাকা।
ঠিকানা :সেক্টর-১৩, রোড-১, বাড়ি-২১, উত্তরা, ঢাকা।

এ ছাড়া আরও অনেক প্রতিষ্ঠানেই এ-সংক্রান্ত ডিপ্লোমা কোর্স করায়। তবে গুণগতমানের কথা মাথায় রেখে এবং ভালো করে খোঁজখবর নিয়ে এসব প্রতিষ্ঠানের মুখোমুখি হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

তবে ক্যারিয়ারের জন্য এয়ারলাইন্সের বিকল্প অন্য কিছুই যেন এখন ভাবতে চায় না সময়ের তরুণরা। আপনিও কি এই পথে হাঁটার কথা ভাবছেন। তবে আজই শুরু করুন প্রস্তুতি।

 

Similar Posts

8 Comments

  1. I may need your help. I’ve been doing research on gate io recently, and I’ve tried a lot of different things. Later, I read your article, and I think your way of writing has given me some innovative ideas, thank you very much.

  2. I may need your help. I tried many ways but couldn’t solve it, but after reading your article, I think you have a way to help me. I’m looking forward for your reply. Thanks.

Leave a Reply