বাংলাদেশ আনসার ক্যারিয়ার
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মাঠপর্যায়ের কাঠামো অনুযায়ী প্রতি উপজেলায় একটি পুরুষ আনসার কোম্পানি ও একটি নারী আনসার প্লাটুন এবং প্রতি ইউনিয়নে একটি পুরুষ আনসার প্লাটুন তালিকাভুক্ত আছে। এই কোম্পানি ও প্লাটুনভুক্ত সদস্যদের বলা হয় সাধারণ আনসার। দেশে বর্তমানে ৫০ হাজার ৪৯ জন প্রশিক্ষিত সাধারণ আনসার সদস্য ৪ হাজার ৭৭৭টি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। এসব আনসার সদস্য বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর, পাওয়ার স্টেশন, কেপিআই, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মহানগরীতে ট্র্যাফিক কন্ট্রোল, রেল, নৌ ও অন্যান্য সরকারি–বেসরকারি স্থাপনার নিরাপত্তার দায়িত্বে কাজ করছেন।
Bangladesh ansar vdp career
সাধারণ আনসার হিসেবে শুধু পুরুষ প্রার্থীদের বাছাইয়ের জন্য গত শুক্রবার প্রথম আলোর চাকরি-বাকরি পাতায় একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আগ্রহী প্রার্থীদের প্রাথমিক বাছাইয়ের জন্য নির্ধারিত তারিখ ও স্থানে উপস্থিত থাকতে হবে। সারা দেশে চারটি রেঞ্জে প্রার্থী বাছাই করা হবে। রেঞ্জগুলো হলো—রংপুর, বরিশাল, খুলনা ও রাজশাহী।
আগ্রহী প্রার্থীদের অনলাইনে আবেদন করতে হবে। চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের ১০ সপ্তাহব্যাপি সাধারণ আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে। আনসার ভিডিপি একাডেমি, সফিপুর, গাজীপুরে এ প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হবে। সাধারণ আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে আপনিও হতে পারেন আনসার বাহিনীর একজন গর্বিত সদস্য।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর গণসংযোগ বিভাগের সহকারী আবদুল মোবিন প্রথম আলোকে বলেন, আনসার ভিডিপি একাডেমিতে মৌলিক প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী সাধারণ আনসার সদস্যকে যখন বিভিন্ন সরকারি–বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত করা হয়, তখন তাঁদের অঙ্গীভূত আনসার সদস্য বলা হয়। সফিপুরে মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষে প্রাথমিকভাবে একজন প্রার্থীকে তিন বছরের জন্য অঙ্গীভূত আনসার সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর ছয় মাসের বিরতি। বিরতি শেষে আবার তিন বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়। এভাবে ন্যূনতম ছয় মাস বিরতি দিয়ে একজন সাধারণ আনসার সদস্য সর্বোচ্চ ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত চাকরি করতে পারেন।
আবেদনের যোগ্যতা
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, সাধারণ আনসার হিসেবে প্রশিক্ষণ নিতে হলে প্রার্থীদের ন্যূনতম জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। বয়স হতে হবে ১৮-৩০ বছরের মধ্যে। ২০২১ সালের ২৫ অক্টোবর তারিখে সর্বনিম্ন ১৮ বছর এবং ২০২১ সালের ৬ নভেম্বর তারিখে বয়স সর্বোচ্চ ৩০ বছর। শারীরিক যোগ্যতার ক্ষেত্রে উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি। বুকের মাপ ৩০/৩২ ইঞ্চি। দৃষ্টিশক্তি ৬/৬। কোনো দূরারোগ্য ব্যাধি থাকলে প্রার্থীকে প্রাথমিক বাছাইয়ে নির্বাচন করা হবে না। মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে ক্রীড়া ক্ষেত্রে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় স্থান অধিকারী ভিডিপি/টিডিপি মৌলিক প্রশিক্ষণ ও আনসার ভিডিপি কারিগরি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
আবেদন পদ্ধতি:
প্রার্থীদের অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি) অথবা যেকোনো অনলাইন-সুবিধাসম্পন্ন কম্পিউটার থেকে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ওয়েবসাইটে (www.ansarvdp.gov.bd) ‘সাধারণ আনসার (পুরুষ) মৌলিক প্রশিক্ষণের আবেদন’ লিংকে ক্লিক করে আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে। ইতিমধ্যে অনলাইনে নিবন্ধন শুরু হয়েছে। আবেদন চলবে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত। অনলাইন নিবন্ধন ফি বাবদ ২০০ টাকা আবেদন পোর্টালে প্রদর্শিত বিকাশ/রকেট/মোবিক্যাশ ইত্যাদির মাধ্যমে জমা দিতে হবে, যা অফেরতযোগ্য। নিবন্ধন সম্পন্ন হলে অনলাইন থেকে প্রবেশপত্রটি প্রিন্ট করে সংরক্ষণ করতে হবে এবং বাছাইয়ের সময় অবশ্যই তা প্রদর্শন করতে হবে।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
যাচাই-বাছাইয়ে অংশগ্রহণের জন্য প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতার মূল সনদপত্র, জাতীয় পরিচয়পত্রের মূল কপি, চারিত্রিক সনদপত্রের মূল কপি, নাগরিকত্ব সনদ, অনলাইন নিবন্ধনের সময় দেওয়া প্রবেশপত্রের মূল কপি, সদ্য তোলা চার কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি এবং প্রার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য কলম, পেনসিল, স্কেল, ক্লিপবোর্ড সঙ্গে আনতে হবে।
সুযোগ-সুবিধা
প্রশিক্ষণ শেষে অঙ্গীভূত হলে সমতল এলাকায় মাসিক ১৩ হাজার ৫০ টাকা এবং পার্বত্য এলাকায় ১৪ হাজার ২০০ টাকা ভাতা পাবেন। প্রতিবছর দুটি উৎসব ভাতা ৯ হাজার ৭৫০ টাকা করে দেওয়া হবে। দুটি ইউনিট রেশন ভর্তুকি মূল্যে প্রদান করা হবে। কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে পাঁচ লাখ টাকা এবং স্থায়ী পঙ্গুত্ববরণ করলে দুই লাখ টাকা অর্থসহায়তা দেওয়া হবে।
বিস্তারিত যোগাযোগ
এই নিয়োগসংক্রান্ত যেকোনো তথ্যের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা আনসার-ভিডিপি কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে পারেন। এ ছাড়া ভিজিট করতে পারেন www.ansarvdp.gov.bd এই ওয়েবসাইটে।